জামালপুরের নান্দিনাতে একটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মানববন্ধন কর্মসূচী ও কর্মবিরতি পালন
জামালপুর সদর উপজেলায় নান্দিনা মহারাণী হেমন্তকুমারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মানববন্ধন কর্মসূচী ও কর্মবিরতি পালন করেছে।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় বিদ্যালয়ের মূল গেটে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন অত্র বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আশরাফ ফারুক, সিনিয়র সহকারী শিক্ষক ইস্রাফিল হোসেন, কোরবান আলী, কামরুল ইসলাম, জিয়া হাসান প্রমুখ। এসময় বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক শিক্ষিকাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে প্রকল্পের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে বিধি বর্হিভূতভাবে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্নপদ দখল করতে রাজধানীর শিক্ষাভবনে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তাৎক্ষণিক আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেন গতকাল মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর। কিন্তু আন্দোলন কর্মসূচী চলাকালীন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা বর্বোরেচিত হামলা চালায়। এতে অনেকে শিক্ষক আহত হন।
ওই ন্যাক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে আমরা আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছি। পাশাপাশি শিক্ষা ক্ষেত্রে বিরাজমান সকল বৈষম্যের অবসানের দাবিতে আজ কালো ব্যাচ ধারণ এবং কর্মবিরতি কর্মসূচী পালন করছেন আমাদের মতো সারাদেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিনের বঞ্চনার কারণে তাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। যেমন, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সমগ্রেডের বদলি যোগ্য সমপদ। সিনিয়র শিক্ষক/ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পদোন্নতির নীতিমালায় ৫০% পদ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকদের জন্য সংরক্ষিত। সিনিয়র শিক্ষক পদে পদোন্নতি হয়েছে ২০২০ সালে। অথচ অজানা কারণে তাদের প্রাপ্য ৫০% ভাগ পদে আজ পর্যন্ত পদায়ন করা হয়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা প্রজেক্ট থেকে রাজস্বে এসেছেন। তাদের পদ ব্লক পোস্ট। এখন তারাই সহকারি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা/জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মতো ক্যাডার পদে চলতি দায়িত্ব পেতে তদবির, আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছেন। যা মোটেও বাস্তবসম্মত নয়।
বিক্ষুব্দ শিক্ষকরা আরো বলেছেন, এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ১৩ থেকে ২০ বৎসর চাকরি করেও শিক্ষকরা টাইমস্কেল/সিলেকশনগ্রেড থেকে বঞ্চিত। টাইমস্কেল/সিলেকশনগ্রেড মামলায় শিক্ষকরা রায় পেলেও শিক্ষা ভবন ৯ মাস পর আজান কারণে আপিল করে। সেই আপিলে স্থগিতাদেশ না থাকলেও কর্তৃপক্ষ তাদেরকে টাইমস্কেল সিলেকশনগ্রেড থেকে বঞ্চিত রেখেছে।
সহকারী শিক্ষক পদে ১৪ বছর যাবৎ চাকরি করছেন, সিনিয়র শিক্ষকের পদ খালি অথচ সিনিয়র শিক্ষক পদে পদোন্নতি দিচ্ছেন না। কর্তৃপক্ষ অজুহাত দেখাচ্ছেন জ্যেষ্ঠতা তালিকা নিয়ে মামলা আছে। শিক্ষকরা দাবি করছেন কর্তৃপক্ষ চাইলে পদোন্নতি দিতে পারে। কারণ ২০২০ সালে সিনিয়র শিক্ষক পদে যে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে সেই তালিকা নিয়ে কারোর আপত্তি নেই, মামলাও নেই। চাইলে সেই তালিকা দিয়ে আপাতত পদোন্নতি দিতে পারে। পরবর্তীতে মামলার রায় আসলে সে অনুযায়ী জ্যেষ্ঠতা তালিকা নির্ধারিত হবে।
তারা দাবী করছেন এই কারণে তারা মানসিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। সারাদেশে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষক কর্মরত। বিসিএস নন ক্যাডার থেকে নিয়মিত তাদের পদায়ন দেয়া হচ্ছে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তারা পাঠদান করেন। তারপরও ন্যায়সঙ্গত এবং যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়া হচ্ছে না। যদি মেনে না হয় তবে তারা অনিদিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি যাবেন বলে জানিয়েছেন।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts sent to your email.