অলৌকিকভাবে মেয়ে থেকে ছেলে: সরিষাবাড়ীর “শাহানাজ এখন তুহিন”
জন্ম থেকেই নারী হিসেবে পরিচিত জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা ইউনিয়নের মেইয়া গ্রামের শাহানাজ আক্তার (১৮) অলৌকিকভাবে পুরুষে রূপান্তরিত হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং শাহানাজ এখন মো. তুহিন মিয়া নামে পরিচিতি লাভ করেছেন।
জন্ম থেকেই শাহানাজ আক্তার খুব মেধাবী। পড়াশোনা করে ২০২৪ সালে এসএসি পাশ করেছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি কর্মের জন্য পাড়ি জমান ঢাকার শহরে। হঠাৎ সেই শাহানাজ আক্তার (১৮) মেয়ে থেকে ছেলেতে রূপান্তরিত হয়েছেন। এই সংবাদে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা পিংনা ইউনিয়নের মেইয়া গ্রামে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
“শাহানাজ আক্তার নাম পরিবর্তন করে এখন তার নাম রাখা হয়েছে মো. তুহিন মিয়া“। এই ঘটনায় এলাকাজুড়ে উৎসুক জনতা ছেলে তুহিনকে দেখতে ভিড় জমিয়েছেন।
পরিবার ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, মেইয়া গ্রামের আব্দুল বাছেদের মেয়ে শাহানাজ। সে পিংনা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসি পাশ করেন। এসএসি পাশ করার পর গত ডিসেম্বর মাসে সে ঢাকার ব্যাঙ্গল কোম্পানিতে চাকরি নেন। চাকরি নেওয়ার ৩ মাস পর হঠাৎ জ্বরে আক্রান্ত হন শাহানাজ আক্তার। চিকিৎসার জন্য ঢাকার একটি ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ সেবন করেন। এরপর তার শরীরে জ্বর কমতে শুরু করে।
এদিকে ধীরে ধীরে তার শরীরের নারীর গঠন ও কণ্ঠস্বর পরিবর্তন হতে থাকে। একপর্যায়ে ৩ মাসের মধ্যে মেয়ে থেকে ছেলের রূপে রূপ ধারণ করে শাহানাজ আক্তার। বিষয়টি পরিবারের লোকজনকে জানালে তারা বিশ্বাস করতে রাজি হন না।
পরে গত সোমবার (৯ জুন) সকালে ঢাকা থেকে সম্পূর্ণ সুস্থ্য হয়ে ছেলে রূপে বাড়িতে আসেন শাহানাজ। পরিবারের লোকজন যাচাইবাছাই করে দেখতে পান শাহানাজ সত্যিই মেয়ে থেকে ছেলে হয়ে গেছেন। পরে তার নাম রাখা হয় শাহানাজ আক্তার থেকে মো. তুহিন মিয়া। এ ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে উৎসুক জনতা তাকে দেখতে বাড়িতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন।
শাহানাজ আক্তার (বর্তমান তুহিন) সাংবাদিকদের জানান, ঢাকাতে গিয়ে অসুস্থ হওয়ার পর থেকে শরীরের পরিবর্তন শুরু হতে থাকে। এই বিষয়টি নিয়ে ঢাকা সাভারের নারী শিশু দি গ্রীন হাসপাতালের ডাক্তারের সাথে কথা বলেছি। তারা বলেছে অতিরিক্ত পুরুষ হরমোন শরীরে থাকার কারণে এমন পরিবর্তন হয়েছে।
“এখন কেমন লাগে জানতে চাইলে বলেন”, ৩ মাস শরীর থেকে জ্বর ছাড়তো না। গঠন পরিবর্তনে ফলে এখন শরীর সম্পূর্ণ সুস্থ্য। পুরুষ হয়েছে এতে কোনো সমস্যা হয়না। এখন তার নাম শাহানাজ থেকে তুহিন মিয়া। মহান আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছায় এমনটা হয়েছে। তিনি রহমানির রাহীম।
এ বিষয়ে শাহানাজের বাবা আব্দুল বাছেদ বলেন, ‘আমার ২টি মেয়ে একটি ছেলে। এখন মেজো মেয়ে শাহানাজ ছেলে হয়েছে। এখন দুটি ছেলে একটি মেয়ে হলো। কি আর করার আছে। আমি অনেক খুশি হয়েছি মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে।’
এ ঘটনায় শাহানাজের বড় বোনের জামাই মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমার শ্বশুর শাশুড়ি সবাই ভাবছি শাহানাজকে বিয়ে দিবো। কিন্তু হঠাৎ এমন করে ৩ মাসের মধ্যে মেয়ে থেকে ছেলে হবে এটা কল্পনাও করি কখনো। আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছা হয়েছে আমরা আলহামদুলিল্লাহ্ বলেছি।’
এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দেবাশীষ রাজবংশী’র কাছে জানতে চাইলে তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘লিঙ্গ নির্ধারক বিষয়ে ছেলে না মেয়ে এটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমেই জানা যায়। মেডিকেল সাইন্সে এমনটা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। হরমোন জনিত কোনো কারণ থাকলেও সেটা পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যেতে পারে বলেও তিনি জানান।’