কুষ্টিয়ায় পদ্মার তীব্র ভাঙন: ঝুঁকিতে হাজারো পরিবার ও মহাসড়ক
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় আকস্মিকভাবে পদ্মা নদীতে নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে, যা দিন দিন আরও তীব্র আকার ধারণ করছে। নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মাদ্রাসা, মসজিদ, কৃষি জমি, ঘরবাড়ি, রাস্তা এবং নদী রক্ষা বাঁধ। সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়ক, যা যে কোনো সময় ভাঙনের কবলে পড়ে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হতে পারে।
মিরপুর উপজেলার বহলবাড়িয়া ও সাহেবনগর এলাকায় ভাঙনের মাত্রা বেশি। সরেজমিনে দেখা গেছে, সাহেবনগর বেড়িবাঁধ ভাঙন থেকে মাত্র ১০-১৫ মিটার দূরে অবস্থান করছে। প্রায় ৫ হাজার পরিবারের বাড়িঘর রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে, আর স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কে নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন।
ভাঙনের ফলে কৃষকের আবাদী জমিও হারিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে ভাঙনের তীব্রতা আরও বাড়ছে। সাহেবনগর, বারোমাইল, মুন্সিপাড়া, টিকটিকিপাড়া, এবং ১২ মাইল এলাকায় পানির প্রবল স্রোত এবং ভাঙন দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। যদি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে সাহেবনগরসহ আশেপাশের গ্রামের ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়বে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পদ্মা নদীতে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন এবং পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম ভাঙনের অন্যতম কারণ। ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা গত ১০ সেপ্টেম্বর নদী ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এবং কুষ্টিয়া ভেড়ামারা মহাসড়ক দুই ঘণ্টার জন্য অবরোধ করেছেন। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড এখনো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, যার ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল জলিল বলেন, “নদী ভাঙনে আমাদের ঘরবাড়ি হারিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু কেউ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বাধ্য হয়ে আমরা রাস্তায় নেমেছি প্রতিবাদ জানাতে।”
এলাকাবাসীর দাবি, পদ্মা নদীর ভাঙন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।