মাদারীপুর

দুর্নীতিমুক্ত পাসপোর্ট অফিসের দাবিতে মাদারীপুরে অভিনব প্রতিবাদ

মাদারীপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ঘুষ-দুর্নীতির কথা বলতে গেলে এর যেনো যেন শেষ নেই। দুর্নীতি রোধে মাঝে মাঝে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা শোনা গেলেও এর বাস্তবে আসলে সব কিছুই  শূন্য। একারণে দুর্নীতি মুক্ত পাসপোর্ট অফিসের দাবিতে এবার মাদারীপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান এবং পাসপোর্ট অফিসের অফিস সহকারী কামরুল হাসানের বিচার ও পদত্যাগের দাবি নিয়ে পাসপোর্ট অফিসের দরজায় ব্যানার টানিয়ে দিয়েছে স্থানীয় সচেতন মহল। এতে এলাকায় এখন চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাদারীপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে গেলে টাকা ছাড়া কোনোই সেবা মিলে না। সেবা গ্রহীতা ভুক্তভোগীদের দাবি, দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে পাসপোর্ট অফিস। বিশেষ সাংকেতিক চিহ্ন ছাড়া কোন পাসপোর্ট ফরম জমা নেয়া হয় না। কারো নামের বানান ভুল বা প্রবাসী হলে এক একটি পাসপোর্ট থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয় বলেও অভিযোগ।

অনুসন্ধানে গিয়ে পাওয়া গেল, নানা অনিয়মের মূলহোতা সহকার পরিচালক মাহমুদুল হাসান এবং অফিস সহকারি কামরুল হাসানের নেতৃত্বে রয়েছে একটি বিশাল সিন্ডিকেট।

সূত্র জানায়, পাসপোর্টের জন্য কেউ সরাসরি আবেদনপত্র জমা দিলে ওই আবেদনপত্রটিতে যে কোনোভাবে ভুল ত্রুটি ধরে পুনরায় আবেদন করতে বলা হয়। তবে আবেদনকারী যদি নির্ধারিত কর্মচারীর কাছে ঘুষের টাকাসহ আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন তা হলে কোনো সমস্যা হয় না। এখানে প্রতিদিন গড়ে দুইশতাধিক আবেদনপত্র জমা ও পাসপোর্ট সরবরাহ হয়ে আসছে। প্রতি পাসপোর্টে একহাজার টাকা হিসাবে দৈনিক আদায় হয় বেশ মোটা অঙ্কের টাকা। পাসপোর্ট সংশোধনে নেয়া হয় ৫০ থেকে একলক্ষ টাকা পর্যন্ত টাকার সমন্বয় করেন অফিস সহকারী কামরুল হাসান। ওই অর্থ শীর্ষ কর্মকর্তাসহ সবাই টাকার ভাগপান বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী বলেন, আমার জাতীয় পরিচয় পত্রের নামের বানান একটি অক্ষর ভুল রয়েছে। এই কারণে আমার কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা নিয়েছে। আমি দেশের বাইরে যাবো। সময় কম তাই দিতে বাধ্য হয়েছি।

মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, দীর্ঘদিন থেকেই পাসপোর্ট অফিসে দুর্নীতি চলে আসছে। এখন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে দেশ চলছে। এই সময়ও থেমে নেই দুর্নীতি। আমরা চাই দুর্নীতি মুক্ত দেশ। দুর্নীতি মুক্ত পাসপোর্ট অফিস। এই অনিয়মের যারা জড়িত তাদের বিচার চাই।

এব্যাপারে মাদারীপুর পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসানের ব্যবহৃত সরকারি নম্বরে ফোন দিলেও সারা মেলেনি। অভিযুক্ত কামরুল হাসানও কথা বলতে রাজি হননি।

তবে মাদারীপুর দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক মো: আখতারুজ্জামান বলেন, এই বিষয় অভিযোগ আসলে আমরা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেব।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker