মাদারীপুরে আদালত প্রাঙ্গণে হত্যা মামলার আসামিকে কুপিয়ে জখম
মাদারীপুরে আদালতে হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে হত্যা মামলার আসামিকে কুপিয়ে জখম করার এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রতিপক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে। অহিদ হাওলাদারকে গুরুতর অবস্থায় জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে মাদারীপুর আদালত প্রাঙ্গণের প্রধান সড়কের সামনে এ ঘটনা ঘটে। কৃষক কাজ করতো আহত অহিদ হাওলাদার। তিনি কালকিনি উপজেলার আলীনগর এলাকার আয়ুব আলী হাওলাদারের ছেলে। সে ওই এলাকার এমারাত সরদার হত্যার মামলার ৩নং আসামী। অভিযুক্তরা হলেন তাইজুল সরদার কুলপদ্বী এলাকার রুস্তম সরদারের ছেলে ও জহির চৌদিকার টুমচর গ্রামের মোতালেব চৌদিকারের ছেলে।
স্বজনরা জানায়, চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি মাদারীপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তাহমিনা সিদ্দিকীর সমর্থকরা একটি বিজয় মিছিল বের করে। মিছিলটি কালিগঞ্জ থেকে ফাসিয়াতলা বাজারের যাবার সময় বেশকয়েকটি হাতবোমা বিস্ফোরণ হয়। এতে আহত এমারাত সরদার নামে এক যুবক ১১ জানুয়ারি রাজধানীর প্রাইম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
এই ঘটনায় নিহতের ছেলে হাসান সরদার বাদী হয়ে ২০ জনের নামে কালকিনি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই হত্যা মামলায় হাজিরা দিতে মাদারীপুর আদালতে আসেন কৃষক অহিদ হাওলাদার। আদালতের কাজ শেষে অহিদ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলে প্রতিপক্ষ তাইজুল সরদার ও জহির চৌদিকারসহ তাদের সমর্থকরা অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় অহিদকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ ওঠে তাইজুল ও জহিরের বিরুদ্ধে। আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে গুরুতর অবস্থায় অহিদকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় জেলা সদর হাসপাতালে। সেখানে বিকেলে তার অস্ত্রোপচার করানো হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। এই ঘটনায় দোষীদের বিচার দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। তবে এই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন অভিযুক্তরা। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
আহত অহিদের ছোটভাই নাহিদ হাওলাদার বলেন, আমার ভাইকে অতর্কিতভাবে কুপিয়ে আহত করেছে তাইজুল ও জহির। তাদের সাথে অনেক লোক ছিল। আমার ভাইয়ের অবস্থা বেশি ভালো না। এই ঘটনার বিচার চাই।
অভিযুক্ত জহির চৌকিদার বলেন, আমরা কেউই এই ঘটনার সাথে জড়িত নই। আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে অহিদের পরিবার। সে কীভাবে আহত হয়েছে তা জানি না।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা: রিয়াদ মাহমুদ বলেন, আহত অহিদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। তার বেশ কয়েকটি স্থানে অপারেশন করানো প্রয়োজন। উন্নত চিকিৎসার জন্য মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে ভাল হয়। তবে, প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রক্তপাত বন্ধ করা হয়েছে।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম সালাউদ্দিন বলেন, অহিদ হাওলাদারকে কুপিয়ে আহত করার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়। পরিবার থেকে লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।