আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ রকিবুল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু
ঢাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় মিছিল দেখতে বাহিরে রাস্তায় বের হলে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত এক দরিদ্র শ্রমিক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। নিহত মো: রকিবুল সরদার (৩০) নামে শ্রমিকের বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার আলীনগর এলাকার দক্ষিণ কামাইপুর গ্রামে সে কালু সরদারের মেঝ ছেলে। তার মৃত্যুতে শোকাভিভূত এখন পরিবারটি। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) ভোর ৬টায় তার মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের পরিবার ও এলাকা সূত্রে জানা গেছে, রকিবুল দরিদ্র পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পরিবারে রয়েছে স্ত্রী, ২ মেয়ে, বাবা, এবং ৩ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে রকিবুল মেঝ। সে দরিদ্র পরিবারের হাল ধরার উদ্দেশ্য ঢাকার উত্তর বাড্ডায় একটি দোকানে সোপার কাজ করতেন। সেই রোজগারের টাকা দিয়ে সংসার চালিয়ে আসছিলেন রকিবুল। গত ২০ জুলাই বিকালে উত্তর বাড্ডা এলাকায় ছাত্র-জনতার একটি মিছিল বের হলে সেসময়ে আ’লীগের সঙ্গে ছাত্র-জনতার ধাওয়া পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ মিছিল দেখতে বাসা থেকে রকিবুল সরদার রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। রকিবুল এসময় দুই পক্ষের মিছিলের মাঝখানে পড়ে গেলে তখন আন্দোলনের মধ্যে থেকে পুলিশের একটি ছোড়া গুলি এসে রকিবুলের পেটের সামনে দিয়ে ঢুকে পিছন দিয়ে বের হয়ে যায়। এতে করে রকিবুল গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় মাটিতে ঢলে পড়ে। স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থল থেকে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে মঙ্গলবার সকালে তার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের স্ত্রী শাবনুর বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার স্বামীর উপর নির্ভরশীল ছিল আমাদের সংসার। এখন আমাদের সংসার কে চালাবে। আমাদের সব শেষ হয়ে গেল। একটি গুলিতে সব স্বপ্ন আজ মিথ্যা হয়ে গেল। এখন আমরা কীভাবে বাঁচবো।
নিহতের মামা এইচ এম মশিউর রহমান জানান, রকিবুল ঢাকায় সোফা কাপড় সেলাইয়ের কাজ করে তার সংসার চালাতো। কোঠা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের ধাওয়া পালটা ধাওয়ার মধ্যে থেকে একটি গুলি এসে লেগে রকিবুলকে শেষ করে দিল। তার সংসারে বাতি আজ নিভে গেল।
এ ব্যাপারে আলীনগর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান মিলন জানান, রকিবুল মারা গেল, তার পরিবারের এখন কি হবে। আসলে বিষয়টি দুঃখজনক।