মাদারীপুরের রাজৈরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময়ে মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা অর্ধশত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এর প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে প্লাস্টিকের ফলের ঝুড়ি জ্বালিয়ে অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করে। এসময় দুটি বুলডোজারসহ সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামকে অবরুদ্ধ করে রাখে বিক্ষুব্ধরা। বুধবার (৫ জুন) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বাসস্ট্যান্ড এ ঘটনা ঘটেছে। পরে দুপুর একটার দিকে ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণের আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে।
জানা যায়, বুধবার সকালে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের টেকেরহাট বাসস্ট্যান্ডের দুইপাশে গড়ে ওঠা অর্ধশত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন রাজৈর উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাইফুল ইসলাম।
ব্যবসায়ীদের দাবি, কোনো প্রকার নোটিশ ছাড়া এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করায় ক্ষতিগ্রস্ত হন তারা। এরই প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধরা ব্যবসায়ীরা ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে। এসময় দুটি বুলডোজারসহ ম্যাজিস্ট্রেটকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন তারা। এতে মহাসড়কের দুইপাশে প্রায় ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত সড়কে আটকা পড়ে শত শত যানবাহন। পরে খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান হাজী মহাসিন মিয়া ও ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ সাগর আহম্মেদ উজির ঘটনাস্থলে গিয়ে দুপুর একটার দিকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান, কোনো নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ করে প্রায় ৫০টি দোকান বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হয়। আমরা দোকানে থাকা অবস্থায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা শুরু করেছে। এতে আমাদের লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমরা তাদের কাছে এক ঘণ্টা সময় চেয়েছিলাম কিন্তু আমাদের সময় দেওয়া হয়নি। দুই পাশে আরও অবৈধ দোকানপাট থাকা সত্ত্বেও সেই গুলি না ভেঙ্গে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মাঝখান থেকে আমাদের দোকানগুলি উচ্ছেদের কাজ শুরু করেন।
তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি সড়ক ও জনপদ (সওজ) এবং জেলা প্রশাসকের দোহাই দিয়ে তড়িঘড়ি করে গাড়িতে উঠে স্থান ত্যাগ করেন।
জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ প্রকৌশলী মোতাহার হোসেন জানান, প্রতি ঈদের আগে মহাসড়কের যানজট কমাতে আমরা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে আসছি। এটা আমাদের নিয়মিত কাজের মধ্যে পরে। তবে আজ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান চালাতে এসে বাধার সম্মুখীন হয়েছি। এর আগে আমরা মাইকিং করে তাদের জানানো হয়েছিল।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান বলেন, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের দুইপাশে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে বেশ কিছু ব্যক্তি দোকানপাট খুলে বসেন। এতে একদিকে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়, অন্যদিকে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে। পরে অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযানে যান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। উচ্ছেদ করা হলে বিক্ষুব্ধরা সড়ক অবরোধ করে। পরে প্রশাসন ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে।