কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলায় মানুষের জীবন যাত্রায় নানামুখী উন্নয়ন ঘটলেও কালের আর্বতে অনেক কিছুর মাঝে গ্রামাঞ্চলের চিরচেনা প্রায় ৫০ প্রজাতির দেশীয় মাছ হারিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, এ অঞ্চলের নদী-নালা , খাল-বিল ও পুকুর-জলাশয়গুলো নানা কারনে দেশি মাছ শূন্য হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব, বন্যা, জলাবদ্ধতা, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, কারেন্ট জালের অবাধ ব্যবহার, নিয়ম বর্হিভূত কীটনাশক-রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার, জলাশয় দুষন, নদ-নদীর নাব্যতা হ্রাস, বাঁধ দিয়ে মৎস্য চাষ, অবাধ ড্রেজিং বানিজ্য, মাটি ভরাট ছোট ছোট মাছ ধরা, বিদেশী লাভজনক আগ্রাসী মাছের চাষ, মাছ প্রজননে নানা বির্তকিত নীতিমালা, স্থানীয় মৎস্য বিভাগের দায়িত্বহীনতা ও আন্তরিকতার অভাবে এলাকায় মৎস্য চাষ কিংবা বিপননে মারাত্মক প্রভাবে ৫০ জাতের দেশি মাছ এখন এলাকায় নিখোঁজের তালিকায়।

সূত্রগুলো আরও জানায়, একটা সময়ে দেশীয় প্রজাতির মাছগুলো এলাকার মানুষের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্নস্থানে রপ্তানি করতো স্থানীয় ব্যবসায়ী ও জেলেরা। অথচ সরকারী পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আজ অস্তিত্ব সংকটে পড়া দেশীয় মাছগুলোর মধ্যে কৈ, মাগুর, শিং, পাপদা, টেংরা, পুঁটি, চাপিলা, শৈল, টাকী, গজার, বোয়াল, আউ, বাইলা, মেনী, বাইন, চিংড়ি,কাচকী, চাঁন্দা, চিতল, টেয়াবৈচা, বুঁতি, খৈইয়াসহ ৫০ প্রজাতির মাছ। তবে লাভজনক বিধায় দেশী-বিদেশী নানা আগ্রাসী মাছ চাষে আগ্রহ বাড়ছে এ অঞ্চলের চাষীদের।
বিশেষ করে উপজেলা বাজারগুলোতে দেশীয় মাছের আমদানী নেই। এ অঞ্চলের মানুষ নানা মাধ্যমে প্রচুর দেশীয় প্রজাতির মাছ চাষ করতো। অনেকে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত মাছগুলো স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে সংসার চালাতো। কিন্তু সময়ের বিচারে জনসচেতনার অভাবে এবং স্থাণীয় মৎস্য বিভাগের নজরদারী না থাকায় ওইসব মাছ পাওয়া যেন সোনার হরিণ। বর্তমানে মৎস্য প্রজনন নানা খাতগুলোতে বির্তকিত কর্মকাণ্ডের জন্যে দেশি প্রজাতির মাছগুলো বংশ বিস্তারে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে ফলে এ অঞ্চলে দেশীয় প্রজাতির মাছগুলোর আকাল অবস্থা বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে -উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সারোয়ার হোসেন বলেন, হোসেনপুরে পুকুর ভরাট,খাল ভরাট এবং বিল ভরাটের কারণে দেশি মাছ এখন প্রায় বিলুপ্তের পথে। কিন্তু আবার যদি পুকুর কাল বিল খনন করা হয় তাহলে দেশি মাছ পাওয়া যেতে পারে