কিশোরগঞ্জ

হোসেনপুরে তীব্র শীত উপেক্ষা করে বোরো জমি তৈরিতে ব্যস্ত কৃষকেরা

হাড় কাঁপানো ঠান্ডা, কুয়াশার জলে টুইটুম্বর যেন বৃষ্টির জলে সদ্য স্নান করা প্রকৃতি কন্যা।দুদিন থেকে ছুটিতে আছে সূয্যিমামা।সবকিছুতে স্থবিরতা থাকলেও থেমে নেই সকলের অন্ন জোগানদার সোনার কৃষকরা। তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশাকে উপেক্ষা করে জমি তৈরি ও বোরো ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর

উপজেলার বোরো চাষিরা। কৃষকদের আশা, আবহাওয়া ভালো থাকলে এবার তারা বাম্পার ফলন পাবেন।তবে,ধান চাষের উপকরন ও শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির কারনে উৎপাদন খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।অতিরিক্ত শীতের কারণে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছেনা বলে কৃষকদের হতাশা। 

গত বছরের তুলনায় এ বছর বাজারে ধানের দাম  বেশি থাকায় উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভায় বিভিন্ন এলাকায় ইরি-বোরো ধান চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। ফলে  উপজেলার গ্রামাঞ্চলে আবাদি ও অনাবাদী জমিতে ব্যাপকহারে ধান চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। 

Image

এদিকে শ্যালো মেশিন কিংবা বৈদ্যুতিক পাম্পের সাহায্যে জমিতে পানি সেচ দিয়ে ধান রোপণের জন্য জমি উপযোগী করে তুলছেন বেশির ভাগ কৃষক। লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষ পদ্ধতি এখন খুব একটা চোখে পড়ে না। অধিকাংশ জমিতে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে জমি চাষ করা হচ্ছে।চাষের মাঠে হাজারো অতিথি বকপাখির দেখা মিলছে চরাঞ্চলের মাঠে।অন্যদিকে, বীজতলা তৈরি ও জমিতে রোপণের জন্য ধানের চারা উত্তোলনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চাষিরা। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ আধিদফতর সূত্রে জানা যায়,চলতি মৌসুমে কিশোরগঞ্জ জেলায় ১ লাখ ৬৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করতে কৃষকদের চলছে কর্মযজ্ঞ। তবে হোসেনপুর উপজেলায় বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার ১৩০ হেক্টর জমিতে।

সরেজমিন তথ্য সংগ্রহকালে  উপজেলার সাহেবেরচর,চরকাটিহারী,চরবিশ্বনাথপুর,জগদলসহ বিভিন্ন গ্রামের মাঠে মাঠে দেখা যায় ইরি-বোরো রোপণে ব্যাস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।কেউ জমিতে সেচ দিচ্ছেন,কেউ উঁচু নিচু জমি সমান করছেন, কেউবা বীজতলা উঠাচ্ছেন, আবার কেউ চাষ করছেন।কেউ কেউ আবার রোপনে ব্যস্ত।

স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর জমিতে তারা বিভিন্ন হাইব্রিড জাতের ধান রোপণ করছেন। অনেকে শ্রমিকের সঙ্গে নিজেরাও বোরো ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত রয়েছেন।শ্রমিক সংকটের কথাও জানালেন অনেক কৃষক।

উপজেলার  চরকাটিহারী গ্রামের কৃষক মানিক,লালমিয়া,আলি হোসেনসহ অনেক কৃষক জানান, এবার বিঘা প্রতি ২০ কেজি ডেপ, ১২ কেজি পটাস, ৫ কেজি জিপসাম এবং ৫ থেকে ৭ ভ্যান গোবর সার মিশিয়ে জমিতে পানি দিয়ে কাঁদা তৈরি করছেন। পরে বীজতলা থেকে চারা এনে সেই জমিতে রোপণ করছেন। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, এ বছর কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাওয়ার কারণে কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন পাওয়ার আশা করা যাচ্ছে। 

Author

সম্পর্কিত সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker