কিশোরগঞ্জ

হোসেনপুরে পাকচং ঘাস চাষে বাজিমাৎ

মাহফুজ হাসান,কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জে পাকচং ঘাস চাষে লাভবান হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা। জেলার হোসেনপুর  উপজেলায় বেশির ভাগ খামারিরা বিদেশি বিভিন্ন জাতের ঘাস চাষ করছেন। এতে নিজেদের খামারের খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে কেউ কেউ ঘাস বিক্রিও করছেন,অর্জন করছেন অধিক মুনাফা। 
Image
গবাদিপ্রাণি মোটাতাজাকরণ ও সুস্থ স্বাভাবিক বিকাশের জন্য একটি উচ্চ ফলনশীল ঘাস চাষ হচ্ছে হোসেনপুর উপজেলায় এ ঘাসটির উৎপত্তিস্থল থাইল্যান্ডের পাকচং প্রদেশে হওয়ায় এটি পাকচং ঘাস নামে পরিচিত বলে জানা যায়।
Image
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ঘাসের ক্ষেত রয়েছে প্রচুর। যে সকল খোলা মাঠে ধান চাষ দেখার কথা সেখানে শুধু ঘাসের বিচরণ। দূর থেকে দেখলে মনে হবে আখের ক্ষেত। চাষ হওয়া এসব ঘাস দিয়ে স্থানীয় খামারগুলোর খাদ্য চাহিদা পূরণ হচ্ছে।
উপজেলার পৌর এলাকার ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মমতাজ ব্যাপারির নাতি মনিরুজ্জামান রাতুল লেখা পড়া শেষ করে, চাকুরির পিছে ছুটাছুটি না করে বেকার জীবনের অবসান ঘটিয়ে হয়েছেন স্বাবলম্বী ও বেকারত্বকে চির বিদায় জানিয়েছেন পাকচং ঘাস চাষ করে। ৬ বছর আগে  পৌর এলাকার কুড়িঘাট সংলগ্ন  ব্রহ্মপুত্রের শাখা নদীর তীরে  ৫ বিঘা জমিতে রোপন করেছিলেন পাকচং  ঘাস।ঘাস বিক্রি করে প্রতিবছর তার আয় হয় ৩/৪ লক্ষ টাকা।মিটে যাচ্ছে নিজের খামারের গো খাদ্যের চাহিদাও।
রাতুলের সফলতা দেখে আশপাশের অনেকেই ঝুঁকে পড়েছেন এই উন্নত জাতের নেপিয়ার ঘাঁস চাষে।রাতুল ঘাঁস চাষের পাশাপাশি করেছেন গরুর খামার প্রাথমিকভাবে একটি গাভী দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে তার খামারে ২৭টি গরু আছে,আছে দুধেল গরুও।
স্থানীয় সোহেল রানা(রাতুলের বন্ধু  জানান, রাতুল এ ঘাস চাষ করে বেকারত্ব ঘুচিয়ে এখন স্বাবলম্বী। কেউ ইচ্ছা পোষণ করলে রাতুলের কাছ থেকে কাটিং নিয়ে চাষ করতে পারেন পাকচং ঘাস।তাছাড়া রাতুলের দেখাদেখি অনেকেই এখন ঝুঁকছে  ঘাস চাষে যুব সমাজ এ থেকে উদ্ভুদ্ধ হচ্ছে।
রাতুল জানান,পাকচং ঘাসটি প্রথম রোপনের ৬০ দিন পর এবং পরবর্তী সময়ে ৪৫-৬০ দিনের মধ্যে কর্তন করতে হবে। কাটিং সংগ্রহের জন্য-৯০-১২০ দিনের মধ্যে কাটতে হবে। একর প্রতি পাকচং জাতের ঘাসের উৎপাদন- বছরে ৪৮ মেট্রিক টন/হেক্টর।প্রতি কেজি ঘাসের উৎপাদন খরচ ২-৫ টাকা মাত্র। 
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মো.উজ্জল হোসাইন জানান, হোসেনপুর উপজেলায় নেপিয়ার জাতের ঘাস চাষে কৃষকের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। গো-খাদ্যের মূল্য বেশি হওয়ায় বিকল্প হিসেবে উন্নত জাতের পাকচং ঘাঁসের চাহিদাও রয়েছে বাজারে। কৃষকদের উদ্ভুদ্ধ করণ ও নিয়মিত সহযোগিতা, পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে  স্থানীয় উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিস বলেও জানান তিনি। এই ঘাস চাষের মাধ্যমে গবাদিপশুর কাঁচা ঘাসের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে, দেশে দুধ ও মাংসের উৎপাদন আশানুরূপভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন  ডাঃ মো. উজ্জল হোসাইন। 

Author

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker