চাঞ্চল্যকর শিহান হত্যাকান্ডের সপ্তাহ পর রহস্য উদঘাটন,গ্রেফতার ৬
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ইও ওয়েষ্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র তাজভীর হোসেন শিহান(২৬) হত্যাকান্ডের চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার ১ এক সপ্তাহ পর অবশেষে রহস্য উদঘাটন সহ ঘটনার সাথে জড়িত ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ।এসময় উদ্ধার করা হয় হত্যার কাজে ব্যবহৃত চাকু,চাপাতি ,সিনজি গাড়ি ও নিহত শিহানের মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ।
ওই দিন ঘটনার ২০ মিনিট আগে স্থানীয় এক কাভারভ্যান চালক মাসুদুর রহমান(৪৬)কে ছিনতাইয়ের উদ্যেশে হাতে পায়ে আঘাত করে ।পরে স্থানীয়রা তাকে সুফিয়া হাসপতালে ভর্তি করেন । মুলত গ্রেফতার কৃতরা ছিনতাইয়ের উদেশ্যে তাদের উপর হামলা করে । এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে গাজীপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: রবিউল ইসলাম পিপিএম, তিনি এসময় বলেন গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা মূলত ছিনতাইয়ের উদ্যেশে প্রথমে মৌচাক স্কাউট স্কুলের সামনে মাসুদুর রহমানকে ছুরিকাঘাত করে আহত করে টাকা পয়সা লুট করে ।
এ ঘটনার ২০ মিনিট পর শিহানকে ছিনতাইয়ের উদ্যেশে ধাওয়া করে ।এসময় শিহান ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়ক পার হয়ে মৌচাকস্থ হানিফ স্পিনিং মিলের সামনে পড়ে গেলে সেখানে ছিনতাইকারীরা তার কোমরে ও পায়ে ছুড়িকাঘাত করে তার কাছে থাকা মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় ।এর কিছুক্ষন পরেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরনে শিহানের ঘটনাস্থরলেই মৃত্যু হয় ।
প্রেস ব্রিফিংএ আরো জানান গ্রেফতার হওয়ার আগ পর্যন্ত ছিনাতইকারীরা শিহানের মৃত্যুর কথা জানতেন না ।এ ঘটনার পর প্রেস প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার খবর প্রকাশের পর হত্যাকান্ডের ঘটনায় আলোরন সৃষ্টি হয় ।এবং এ ঘটনায় গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী ।এ ঘটনার পর থেকেই পুলিশ রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে ।
পরে ছিনতাই হওয়া শিহানের মোবাইলফোন ট্রেকিং করেই মুলত বিভিন্ন স্থানে পুলিশ অভিযান চালিয়ে এ হত্যাকান্ডের সাথে জরিত ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশের একটি চৌকুস টিম ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার আমগাছিহান্দা গ্রামের হালিম উদ্দিনের ছেলে সরওয়ার হোসেন শারু(২৮),কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার কাশিয়াবাড়ী গ্রামের আলী আজগরের ছেলে নাজিমুদ্দিন নয়ন(৩৫),একই জেলার ওলিপুর উপজেলার মধুপুর গ্রামের আজগর আলীর ছেলে ছাইফুল ইসলাম (৪২),লক্ষিপুর সদর উপজেলার জামেরতলী গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে জুয়েল মিয়া(২৪),জয়পুর হাটের আক্কেলপুর উপজেলার মোহনপুর গ্রামের আব্দুল জলিলের চেলে মিলন মযিা(২৭),ও ভোলার চরফাসন উপজেলার মৃত সুলতান বয়াতির ছেলে আনোয়ার হোসেন(৩৫) ।
গ্রেফতারকৃতরা তাকওয়া পরিবহন এর হেলপার ও ড্রাইভার,চায়ের দোকনদার পাশাপাশি তারা বিভিন্ন সময় ছিনতাইয়ের ঘটনার সাথে জড়িত ছিলেন । গ্রেফতারকৃতরা পুলিশের কাছে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা শিকার করেছেন ।
প্রেস ব্রিফিং এ এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(এডমিন) মাহাবুর রহমান,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম) আমিনুল ইসলাম,কালিয়াকৈর থানার ওসি রিয়াদ মাহমুদ,মৌচাক ফাড়িঁ ইনচার্জ মহিদুল ইসলাম, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই সাইদুর রহমান প্রমুখ ।
উল্লেখ গত বৃহস্পতিবার ভোরে রাজধানীর উত্তরার উদ্যেশে মৌচক জামতলী এলাকার নীজ বাসা থেকে যাচ্ছিলেন নিহত তাজভীর হোসেন শিহান পথিমধে মাজার রোডের মাথায় ছিনতাইকারীরা তার গতিরোধ করলে শিহান প্রান বাচাঁতে দৌর দেয় ।এসময় ছিনতাইকারীরা তার পিছু ধাওয়া করে হানিফ স্পিনিং মিলের সামনে ছুড়িকাঘাত করে হত্যা করে ।
পরে পুলিম মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় । নিহত শিহান পড়াশোনার পাশাপাশি উত্তরার একটি বায়িং হাউজে চাকরী করতেন ।