কালিয়াকৈর

কালিয়াকৈরে স্ত্রীর পরকিয়ার জেরে প্রাণ গেলো ছাত্রদল নেতার

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সৈয়দপুর গাবতলী এলাকায় শ্বশুর বাড়িতে (মেয়ের জামাই) জাহাঙ্গীর আলমকে (৩০) শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর কানিজ ফাতেমা ওরফে শিফার (১৮) বিরুদ্ধে।

নিহত পরিবারের অভিযোগ পরকিয়ার জেরেই জাহাঙ্গীরকে হত্যা করা হয়েছে। ওই ঘটনায় নিহতের বাবা আমজাদ সিকদারকে ছেলের শ্বশুর বাড়ির লোকজন মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময় এ ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শুক্রবার সকালে উপজেলার গাবতলী এলাকায় শ্বশুর বাড়ি থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। নিহত জাহাঙ্গীর আলম মির্জাপুর উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ন আহব্বায়ক ।জাহাঙ্গীর শশুর বাড়িতে থেকে ইট বালুর ব্যবসা করতেন।

নিহত হলেন, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার সৈয়দপুর ঘুড়াই এলাকার আমজাদ সিকদারের ছেলে। তিনি শ্বশুর বাড়িতেই ছিলেন।

নিহতের পরিবার, এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলমের সাথে গত ৪ মাস আগে উপজেলার গাবতলী এলাকায় আপন মামা সালাউদ্দিনের মেয়ে কানিজ ফাতেমা ওরফে সিফা সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই ব্যবসায়ীক কাজে বেশীর ভাগ সময় শশুর বাড়িতেই থাকতেন। এদিকে বিয়ের পর থেকেই দুজনের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। জাহাঙ্গীর এর সাথে বিয়ের আগেও কানিজ ফাতেমা অন্য এক ছেলে সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে ওই ছেলে সাথে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়ার পনের দিন পর মেয়ের পক্ষের লোকজন খুজাখুজি করে মেয়েকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। তার পর বর্তমান স্বামী জাহাঙ্গীর আলমের সাথে বিয়ে হয়। এ নিয়ে ইতিমধ্যে কয়েকবার ওই প্রেমিককে না পেয়ে বিষ পান করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তারপর থেকেই মেয়ে তার বাবার বাড়িতেই থাকতো। এরপর থেকে তাদের পরিবারের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো। এরই সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার রাতের খাবার শেষে স্বামী স্ত্রী দুজনেই ঘুমিয়ে পড়ে। ওই রাতের কোনো এক সময় ছেলেকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে নিহতের পরিবারের অভিযোগ।

বাবা আমজাদ সিকদার ছেলের মৃত্যুর খবর শোনে ছেলের শ্বশুর বাড়ি ছুটে আসে। নিহতের বাবা চিৎকার করে বলে আমার ছেলেকে ওরা হত্যা করেছে। এসময় মেয়ের পক্ষের লোকজন ওই নিহতের বাবাকে মারধর করে।

খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানা পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে নিহতে লাশটি উদ্ধার করেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সিফা ও তার পরিবারের সদস্যরা বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এদিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।

নিহতের ছোট ভাই জুয়েল হোসেন জানান, মেয়ের সাথে অন্যত্র এলাকার এক ছেলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল সেই সুবাদে আমার ভাইকে হত্যা করতে পারে। বিয়ের আগে সিফার সাথে অন্য একটি ছেলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো এমন কি ওই ছেলের সাথে পালিয়েও গিয়েছিলো।

কালিয়াকৈর থানার (এসআই) রফিকুল ইসলাম জানান, নিহতের শরীরে হত্যার কোন আলামত পাওয়া যায়নি। তবে নিহতের স্বজনদের আবেদনের প্রেক্ষিতে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রির্পোট পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker