গাজীপুরে শ্রমিকদের বিক্ষোভ-ভাঙচুর কারখানায় অগ্নিসংযোগ
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কাশিমপুর মেট্রো থানার ভবানিপুর এলাকায় বুধবার দুপুরের দিকে আন্দোলনকারী শ্রমিকরা বিগবস কর্পোরেশন লিমিটেড নামের একটি পোশাক কারখানার আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসময় কারখানায় আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যাওয়ার পথে উত্তেজিত শ্রমিকরা ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ী ভাংচুর করে। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নিজ ষ্টেশনে চলে যায়।
পুলিশ, এলাকাবাসী ও কারখানা কর্তৃপক্ষ জানান, চক্রবর্তী এলাকায় অবস্থিত বেক্সিমকো কারখানার শ্রমিকরা সকাল থেকেই বেতনের দাবিতে কালিয়াকৈর- নবীনগর সড়কের জিরানি, চক্রবর্তী, কবীরপুর এলাকায় বিক্ষোভ করতে থাকে। এসময় এই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এক পর্যায়ে দুপুরে দিকে আন্দোলনরত শ্রমিকরা ভবানিপুর এলাকা সহ আশপাশে এলাকার বিভিন্ন পোশাক কারখানা ছুটি ঘোষণার দাবি করে হামলা চালায়। আন্দোলনরত শ্রমিকরা চালু কারখানার শ্রমিকদের কাজ বন্ধ করে তাদের সাথে বিক্ষোভে অংশ নিতে বলে।
ওইসব বিগবস কর্পোরেশন লিমিটেড নামক পোশাক তৈরির কারখানা ও ওয়্যার হাউজটির কাজ বন্ধ না করায় বেক্সিমকো কারখানার শ্রমিকরা হামলা চালিয়ে জানালার গ্লাস ও গেট ভাঙচুর চালায়। এসময় ওই কারখানার শ্রমিকরা পাল্টা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে আন্দোলনরত শ্রমিকরা কারখানার ভিতর গিয়ে ক্যামিকেল গুদামের প্যাষ্টিক ড্রামে ও ওয়্যার হাউজের রাখা কপড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে কারখানায় মওজুত রাখা কাপড়ে আগুন লেগে যায়। কারখানা কর্তৃপক্ষ জানান, ওয়্যার হাউজে এক্সপোটের ফেব্রিক্স ছিল।
শ্রমিকদের বিক্ষোভের মুখে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। তবে সড়কে তিনটার দিকে সারাবো ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন।
বিগবস কর্পোরেশন লিমিটেড কারখানার ম্যানেজার মোজাম্মেল হক টিপু বলেন, বেক্সিমকো কারখানার শ্রমিকরা বেতন পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ করে। একপর্যায়ে শ্রমিকরা আমাদের কারখানাসহ বিভিন্ন কারখানায় এসে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। পরে শ্রমিকরা আমাদের কারখানার ওয়্যার হাউজে অগ্নিসংযোগ করে। সেখানে আমাদের মূল্যবান ফেব্রিক্স ছিল। আন্দোলনরত শ্রমিকরা বাসাবাড়ী ও দোকানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করেছে।
সারাবো ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসের মো: তাশারফ হোসেন জানান, শ্রমিকদের বিক্ষোভের কারণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। সাড়ে তিনটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
কাশিমপুর মেট্রো থানার ওসি জাহিদুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকেই শত শত শ্রমিক নানা দাবী নিয়ে সড়কে বিক্ষোভ করে। এসময় কিছু শ্রমিক এই এলাকার চালু কারখানা বন্ধের দাবীতে একাধিক কারখানার গেইটে গিয়ে ভাংচুর করে। একটি কারখানায় আগুন ধরিয়ে দেয়। আমাদের পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।