ফরিদপুরে শিক্ষার্থীদের বাজার মনিটরিংয়ে নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শকের আত্মীয় এক ব্যবসায়ীর ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক গোডাউনে মিলেছে ‘খাদ্য অধিদফতর’ লেখা শত শত বস্তা চাল এবং টিসিবির পণ্য। এছাড়া মেয়াদ উত্তীর্ণ ওএমএসের আটা মিলেছে ওই ব্যবসায়ীর আরেকটি গোডাউনে।
সোমবার (১২ আগস্ট) বিকেলে শহরের টেপাখোলা বাজারের ব্যবসায়ী ও বর্ষা অটো রাইস মিলের স্বত্ত্বাধিকারী মোসলেম বিশ্বাসের ব্যক্তিগত চারটি গোডাউনে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালিয়ে চারটি গোডাউন সিলগালা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (সিনিয়র সহকারী কমিশনার) আবুজর মো: ইজাজুল হক।
এর আগে ওই বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা বিষয়টি জানতে পেরে জেলা প্রশাসক মো: কামরুল আহসান তালুকদারকে অবগত করেন। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে সেখানে পাঠান।
সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহিম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা এখানে বাজার মনিটরিং করছিলেন। এ সময় আমাদের কাছে খবর আসে খাদ্য অধিদফতরের সিল সম্বলিত একটি চাল রয়েছে। বিষয়টি জেনে এখানে এলে ব্যবসায়ী বিভিন্ন বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দেন আমাদের। পরবর্তীতে আমরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে আমরা অবগত করি।
খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান জেলা নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক (স্যানিটারি ইন্সপেক্টর) বজলুর রশিদ। তিনি শিক্ষার্থীদের জানান জেলা প্রশাসক পাঠিয়েছেন। এ সময় তিনি সকল কিছু বৈধ আছে বলে শিক্ষার্থীদের এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান। এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। পরে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়লে ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে চারটি গোডাউন সিলগালা করেন।
জানা যায়, নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক বজলুর রশিদ ওই ব্যবসায়ীর ছোট ভাইয়ের মেয়ের জামাতা।
সরেজমিনে দেখা যায়, ওই ব্যবসায়ীর পাঁচ-ছয়টি গোডাউন রয়েছে ওই এলাকায়। যার একটি গোডাউনে শতাধিক বস্তা চাল রয়েছে। যার প্রতিটি বস্তায় লেখা রয়েছে ‘খাদ্য অধিদফতরের জন্য’। এ সময় সেখানে টিসিবির পণ্য লেখা আরো নয়টি বস্তায় ডাল পাওয়া যায়। একইভাবে লেখা আরেকটি গোডাউনেও চালের সন্ধান মিলে। যার প্রতিটি বস্তায় সরকারি গোডাউনের চাল রয়েছে। অপর একটি গোডাউনে বিপুল পরিমাণ টিসিবির পণ্য চিনিও পাওয়া যায়। এছাড়া আরো একটি গোডাউনে ওএমএস লেখা শতাধিক বস্তা আটা দেখা যায়, যা মেয়াদউত্তীর্ণ ছিল।
তবে এসব বিষয়ে ওই ব্যবসায়ী দাবি করে বলেন, তার ব্যক্তিগত মিল থেকে চালগুলো বস্তায় ভরা হয়েছে এবং বস্তাগুলো খাদ্য অধিদফতর থেকে ক্রয় করা হয়েছে।