চট্টগ্রাম

বন্যদুর্গত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তায় দিলো “আমরা ওমান প্রবাসী”

সম্প্রতি স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় নোয়াখালী ফেনী’সহ ১১ জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তের দেড় মাসেও হয়নি পরিপূর্ণ সুব্যবস্থা পূর্ণ সহায়তা ও পূণর্বাসন। দরিদ্র ক্ষতিগ্রস্ত বন্যার্তদের সাহায্য সহায়তা প্রয়োজনের তুলনায় ছিল যৎসামান্য খুবই নগণ্য। 

শুরু থেকে এখনো পর্যন্ত রয়ে গেছে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের আর্তনাদ হাহাকার। মানবিক সহায়তায় সেবা’য় বন্যাদুর্গত অসহায় ক্ষতিগ্রস্থের পাশে “আমরা ওমান প্রবাসী”। শফিউল্লাহ রাজু, মোহাম্মদ আলী, মোজাফফর হাসান ও বন্ধুদের সহযোগিতায় বন্যাদুর্গত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তের মাঝে ১২০ পরিবারকে আর্থিক অনুদান সহায়তা প্রদান করা হয়।

৭ অক্টোবর (সোমবার) সারাদিনের কার্যক্রমে  ফেনী ও নোয়াখালী জেলার ছাগলনাইয়া ও সেনবাগ উপজেলায় প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকায় বন্যদুর্গত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের এই আর্থিক অনুদানে সহায়তা প্রদান করা হয়।

“আমরা ওমান প্রবাসী” দের পক্ষ থেকে ইন্জিনিয়ার শফিউল্লাহ রাজু ও মোঃ আলীর নেতৃত্বে ফেনী ও নোয়াখালীর বন্যার্তদের মাঝে আর্থিক অনুদান কর্মসূচির উদ্যোগ নেয়া হয়। 

সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন ইন্জিনিয়ার সৈয়দ মো. মোজাফফর হাসান ছিদ্দীক রাসেল,বাবলু, মনছুর।

নোয়াখালীর সেনবাগের ৩নং ডুমুরিয়া ইউনিয়নের স্থানীয় জন প্রতিনিধি বিশিষ্ট ব্যবসায়ি সোলাইমান মজুমদার , হোছনে আঁরা বেগম মহিলা মেম্বার প্রমুখ। এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের সনাক্তকরণ ও সহায়তা প্রদানের সব রকমের সহযোগিতায় দায়িত্ব পালন করেন।এবং ফেনীর ছাগলনাইয়ার ৮নং রাধা নগর ইউনিয়নের স্থানীয় প্রতিনিধি বাবলু, মুরাদ পাটোয়ারী, বাবু প্রমুখ এলাকার স্থানীয়দের সহায়তায় ক্ষতিগ্রস্তদের সনাক্তকরণ ও সহায়তা প্রদানের সব রকমের সহযোগিতায় দায়িত্ব পালন করেন।

উল্লেখ্য: দেশে আকষ্মিক বন্যায় স্মরণকালের ইতিহাসে নোয়াখালী এবং ফেনীতে ৯০ শতাংশ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ৪৮ শতাংশ মানুষের ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতি শিকার হয় ১১জেলার মানুষ। ক্ষতিগ্রস্তরা এখনো নিরুপায় অসহায়।

বন্যা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি নোয়াখালীতে। ৪ হাজার ১৯১ কোটি টাকা, যা মোট ক্ষতির ২৯ শতাংশ। এ ছাড়া কুমিল্লায় ৩ হাজার ৩৯০ কোটি, ফেনীতে ২ হাজার ৬৮৩ কোটি, চট্টগ্রামে এক হাজার ৬৭৬ কোটি ৯৪ লাখ, লক্ষ্মীপুরে এক হাজার ৪০৩ কোটি ৯১ লাখ, মৌলভীবাজারে ৫০৬ কোটি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৪৪ কোটি, হবিগঞ্জে ১৪৩ কোটি ৫৯ লাখ, খাগড়াছড়িতে ১২৭ কোটি ২৩ লাখ, কক্সবাজারে ১০০ কোটি এবং সিলেটে ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে হিসাব করেছে সিপিডি।

গবেষণা সংস্থাটি বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোর মধ্যে লক্ষ্মীপুরে মাথাপিছু সরকারি সাহায্যের পরিমাণ ছিল ৬২ টাকা ১০ পয়সা, নোয়াখালীতে ৯২ টাকা ১০ পয়সা, কুমিল্লায় ১৩৬ টাকা ৭০ পয়সা ও সিলেটে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ৩২০ টাকা। রবিবার (৬ অক্টোবর) ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুল ধরে এসব তথ্য জানান সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

ক্ষতিগ্রস্ত দারিদ্রদের দুরাবস্থা দুর্দশা বাস্তবতার চিত্র এখনো অবর্ণনীয়। নামেমাত্র সহায়তা পেলেও আর্থিক দারিদ্রতায় বসবাস অনেকেই।  বসবাসের অনুপযোগী রয়েছে এখনো পর্যন্ত অনেকের বসতভিটা। প্রয়োজনীয় সহায়তা না পাওয়ায় নানা জটিলতা সংকটে ভয়াবহতায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার নিরহ অসহায় সাধারণ মানুষ। তারা অনেকেই মানবেতর ধ্বংসস্তূপ ঘরেই জীবন যাপন করছে। এখনো রয়েছে অনেকেই অন্যের বাড়িতে আশ্রিত। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তের অপরনীয় ক্ষয়ক্ষতিতে কোনমতেই ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভব নয়। বন্যার্তদের পুন:র্বাসনের ধারাবাহিকতায় এটা “আমরা ওমান প্রবাসী” দের পক্ষ থেকে সামান্য প্রয়াস মাত্র। প্রচার-প্রসার নয়। মানুষ মানুষের জন্য জীবন জীবনের জন্য। মানবিক কাজে মানুষ হোক উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত।

Author

মোহাম্মদ ইসমাইল (ইমন), স্টাফ রিপোর্টার

পেশায় একজন সাংবাদিক। তিনি ৩০ মে থেকে মিশন ৯০ নিউজে চট্টগ্রাম বিভাগীয় এলাকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker