গত ৫ আগস্ট গণ-আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগে ছাত্র-জনতার বিপক্ষে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় রাজপথে নেমেছিল আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ‘শান্তি সমাবেশ’ নামক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে এক দফার কবর দিতে চেয়েছিল তারা। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, বিশেষ করে ফেসবুকে ব্যাপক সক্রিয় থাকতেন। এমনকি শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে যখন ফেসবুক বন্ধ করে দেওয়া হয়, তখনো বেশিরভাগ নেতাকর্মীকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় দেখা গেছে। নিজেদের ফেসবুক প্রোফাইল ও পেজ সক্রিয় ছিল সেই সময়ে। প্রায় প্রতিদিনই পোস্ট, ছবি, ভিডিও, লাইভে সরব ছিলেন তারা।
তবে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতনের পর স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতাকর্মীর প্রোফাইল ও পেজগুলো যেন হারিয়েই গেছে ফেসবুক থেকে। কয়েকদিন ফেসবুক ঘেঁটে দেখা যায়, বেশি সরব নেতাদের প্রোফাইল বা পেজগুলো ফেসবুকে আর নেই।
সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নানের কোনো প্রোফাইল এখন নেই ফেসবুকে। নেই তাঁর কোনো পোস্ট। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামের প্রোফাইলও উধাও ফেসবুক থেকে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক এম. লুৎফুর রহমান মাসুমের ফেসবুক প্রোফাইল সক্রিয় রয়েছে। তবে ৫ আগস্টের আগে কোটা আন্দোলনের বিপক্ষে দেয়া কোনো পোস্ট ওই প্রোফাইলে দেখা যাচ্ছে না।
উত্তর সাতকানিয়া সাংগঠনিক উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু ছালেহ শানের প্রোফাইল সক্রিয় আছে এখনো। সর্বশেষ পোস্ট ২৩ আগস্ট। তাতে নিজের পিতার মৃত্যুবার্ষিকীর কথা তুলে ধরেছেন। তবে কোটা আন্দোলনের বিপক্ষে দেয়া কোনো পোস্ট ওই প্রোফাইলে আর দেখা যাচ্ছে না।
সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন চৌধুরীর ফেসবুক প্রোফাইল খুঁজে পাওয়া গেলেও তাতে ১ আগস্টের পরের কোনো পোস্টের খোঁজ মিলছে না। এছাড়া স্থানীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নামের বেশিরভাগ ফেসবুক প্রোফাইল ও পেজগুলো আর নেই। তবে কিছু প্রোফাইল ও পেজ সক্রিয় থাকলেও তাতে ৫ আগেস্টর পরে নতুন করে কোনো পোস্ট নেই। এমনকি কোটা আন্দোলনের বিপক্ষে দেয়া পোস্টগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের এসব প্রোফাইল ও পেজগুলো ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দিয়েছে কি না, এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে কোনো প্রোফাইল বা পেজে অনেক বেশিসংখ্যক ব্যবহারকারী রিপোর্ট করলে সেগুলো বন্ধ হয়ে যায়। আবার অনেক সময় ব্যবহারকারী নিজেও প্রোফাইল বা পেজ নিষ্ক্রিয় (ডিজঅ্যাবল) করে রাখতে পারেন।
জানা গেছে, ‘সাইবার ৭১’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আন্দোলনের পক্ষে সরব তৎপরতা চালায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে যাঁরা উসকানিমূলক পোস্ট প্রকাশ করছিলেন, তাঁদের প্রোফাইল ও পেজে ছাত্রদের পক্ষ নিয়ে ‘সাইবার অ্যাকশন’ নেওয়া হতো। বিভিন্ন পদধারী নেতার প্রোফাইল ও পেজের বিরুদ্ধেও একই রকম তৎপরতা চালানো হতো।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts sent to your email.