বরগুনা

মাদক বিক্রিতে বাঁধা দেয়ায় মোটর সাইকেল চালককে কুপিয়ে হত্যা

আটক-১

মাদক বিক্রিতে বাঁধা দেয়ায় মোটর সাইকেল চালক আরাফাত খাঁনকে (২২) মাদক বিক্রেতা তালতলী উপজেলা  যুবদল যুগ্ম আহবায়ক শহীদ সিকদার, তার দুই ছেলে সোহেল সিকদার, আরাফাত সিকদার ও ভাতিজা বায়েজিদ সিকদার কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ সাগর হাওলাদার নামের একজনকে আটক করেছে।  ঘটনা ঘটেছে তালতলী উপজেলার কচুপাত্রা পুরাতন বাজার এলাকায় শনিবার রাত নয়টার দিকে।

জানাগেছে, তালতলী উপজেলা যুবদল যুগ্ম আহবায়ক পঁচাকেড়ালিয়া ইউনিয়নের কলারং গ্রামের শহীদ সিকাদার, তার দুই ছেলে সোহেল সিকদার, আরাফাত সিকদার ও ভাতিজা বায়েজিত সিকদার দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রি করে আসছে।

গত বৃহস্পতিবার শহীদ সিকদারের ছেলে সোহেল সিকদার ও আরাফাত সিকদার কচুপাত্রা বাজারে মাদক বিক্রি করতে আসে। এতে মোটর সাইকেল চালক আরাফাত খাঁন বাঁধা দেয়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্ধ হয়।

শনিবার রাত নয়টার মোটর সাইকেল চালক আরাফাত খাঁন প্রতিবেশী হাবিব উল্লাহকে নিয়ে কচুপাত্রা পুরাতন বাজারে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে ওত পেতে থাকা মাদক বিক্রেতা শহীদ সিকদার, তার দুই ছেলে সোহেল সিকদার, আরাফাত সিকদার ও ভাতিজা বায়েজিদ সিকদারসহ ১০-১২ জন সন্ত্রাসী আরাফাত খাঁনের মোটর সাইকেলের গতিরোধ করে। পরে মোটর সাইকেল থেকে নামিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে গুরুতর জখম করে। এ ঘটনা স্থানীয় অর্ধ শতাধিক  লোকজন প্রত্যক্ষ করে।

কিন্তু সন্ত্রাসীদের ভয়ে তারা আরাফাতকে রক্ষায় এগিয়ে আসেনি। আরাফাতকে কুপিয়ে তারা বীরদর্পে চলে যায় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। এ সময় মোটর সাইলেকের থাকা তার প্রতিবেশী হাবিব উল্লাহ গুরুতর জখম হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে।

ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ রাসেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান মোটর সাইকেল চালক আরাফাত খাঁনকে মৃত্যু ঘোষনা করেন। অপর আহত হাবিব উল্লাহকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে।

রবিবার পুলিশ নিহত আরাফাত খানের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে প্রেরণ করেছে। এ ঘটনা সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ওইদিন রাতে পুলিশ সাগর হাওলাদার নামের একজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, মোটর সাইকেল চালক আরাফাত খাঁনকে কলারং গ্রামের শহীদ সিকদার ও তার দুই ছেলে সোহেল সিকদার, আরাফাত সিকদার ও ভাতিজা রায়েজিদ সিকদারসহ ১০-১২ জনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে।

আহত হাবিব উল্লাহর বাবা ইলিয়াস হাওলাদার বলেন, কলারং গ্রামের শহীদ সিকদার, তার দুই ছেলে ও ভাতিজা মিলে মোটর সাইকেল চালক আরাফাত খাঁনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আরাফাতের মোটর সাইকেলে আমার ছেলে হাবিব উল্লাহ ছিল। তাকেও কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবী করছি।

নিহত আরাফাত খাঁনের বাবা আব্দুল জলিল খাঁন কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, মাদক বিক্রিতে বাঁধা দেয়ায় আমার ছেলেকে শহীদ সিকদার ও তার দুই ছেলে, ভাতিজাসহ সহযোগীরা কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।

শারিকখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ ফারুক খাঁন বলেন, মোটরসাইকেল চালক আরাফাত খাঁন আমার ভাইয়ের ছেলে। তাকে শহীদ সিকদার ও তার ছেলেরা তাদের সহযোগীরা পুর্ব শত্রæতার জের ধরে কুপিয়ে হত্যা করেছে।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ রাসেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান বলেন, আরাফাত খাঁনকে হাসপাতালে আনার আগেই মারা গেছেন। অপর আহতকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

তালতলী থানার ওসি মোঃ শাহজালাল বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সাগর হাওলাদার নামের একজনকে আটক করা হয়েছে।  অপর জড়িতদের আটক চেষ্টা অব্যাহত আছে।

Author

শ্রী মিথুন, বরগুনা জেলা প্রতিনিধি

পেশায় একজন সাংবাদিক। তিনি ১১ জুন থেকে মিশন ৯০ নিউজে বরগুনা জেলার সংবাদ দাতা হিসেবে, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।

সম্পর্কিত সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker