মোঃরুবেল আহমেদ, শেরপুর প্রতিনিধি:
তিনদিন ধরে অব্যাহত ভারী বর্ষণ ও সীমান্তের ওপার থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
ঢলের পানিতে বুধবার ভোরে উপজেলার রামেরকুড়া এলাকায় মহারশী নদীর বাঁধ তলিয়ে আকস্মিক পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপজেলা পরিষদসহ বিভিন্ন সরকারি দফতর, ঝিনাইগাতী বাজার ও অর্ধশতাধিক বাড়ি পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
জানা গেছে, গত সোমবার রাত থেকে ঝিনাইগাতীতে প্রবল বর্ষণ হচ্ছে। সেই সঙ্গে ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবল বেগে মহারশি নদীর রামেরকুড়া, দীঘিরপাড় ও খৈলকুড়া এলাকার বেড়িবাঁধ উপচে পড়ে ঝিনাইগাতী সদর বাজারে প্রবেশ করে।ঝিনাইগাতী বাজারসহ উপজেলা পরিষদ ভবন, ডাকঘর, সাবরেজিস্ট্রার, নলকুড়া ভূমি কার্যালয়, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনওসহ সরকারি কর্মকর্তাদের বাসভবনের চারপাশের এলাকা প্লাবিত হয়। বাজারের অধিকাংশ দোকান ও বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করে মালামালের ক্ষতি হয়েছে।
এ ছাড়া সদর ইউপির রামেরকুড়া, খৈলকুড়া, রামনগর, দিঘীড়পাড়, চতল, আহাম্মদনগরসহ ১০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অন্তত ৩০টি পুকুরের মাছ ঢলের পানিতে ভেসে গেছে। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত ঝিনাইগাতী- রাংটিয়া সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
ঝিনাইগাতী বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী মো. শুক্রর আলী বলেন, তার দোকানে ঢলের পানি প্রবেশ করেছে। এতে প্রায় ৩০ হাজার টাকার মালামাল ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
রামনগর গ্রামের আসাদুজ্জামান বলেন, ঢলের পানিতে তার ৭ একর জমির পুকুর তলিয়ে গেছে। এতে তার ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে।
ঝিনাইগাতী বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ বলেন, ঝিনাইগাতী সদর বাজারের মসজিদ রোডসহ বাজারের একাংশ হাঁটু পানিতে তলিয়ে গেছে। বাজারের অধিকাংশ দোকান-পাটে পানি প্রবেশ করেছে, পানি নেমে গেলে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে। প্রত্যেক বর্ষাকালে ব্যবসায়ীদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যেই শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান ব্যবসায়ী সংগঠনের এ নেতা।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সিরাজুস সালেহীন বলেন, ঢলের পানিতে বেশ কিছু এলাকার পুকুর প্লাবিত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিরূপণের কাজ চলছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, পাহাড়ি ঢলের পানি বিভিন্ন এলাকাতে প্রবেশ করেছে। এতে প্রায় ২৫ হেক্টর জমির বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত আছে। বৃষ্টি না হলে রাতের মধ্যে পানি নেমে যাবে। আশা করছি ফসলের কোনো ক্ষতি হবে না।
ইউএনও ফারুক আল মাসুদ বলেন, অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে মহারশী নদীর বাঁধের কিছু অংশ তলিয়ে পাহাড়ি ঢলের পানিতে ঝিনাইগাতী উপজেলা শহরসহ কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তবে ঢলে তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। বৃষ্টি না হলে আশা করছি রাতের মধ্যে এ পানি নেমে যাবে। ঢলের পানিতে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিরূপণের কাজ চলছে বলে তিনি জানান।