নওগাঁবাণিজ্যরাজশাহীসারাদেশ

লকডাউন ঘোষণায় নওগাঁর আমের বাজারে ধস, দিশেহারা চাষিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আমের অঞ্চল ও আমের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে প্রসিদ্ধি পেয়েছে নওগাঁ জেলা। এখানকার আম উৎপাদনকারীরা বছরের প্রথম থেকেই বৈরি আবহাওয়ায় উৎপাদন কমে যাওয়ার আশংকা প্রকাশ করে আসছিল। এরপর করোনা পরিস্থিতিতে যানবাহনের অভাবে পাইকারি ক্রেতার সংখ্যা তুলনামুলক কম থাকায় আম বাজারজাতকরণ নিয়েও যথেষ্ট চিন্তিত ছিলেন তারা। মে মাসের শেষে আম পাড়ার মৌসুম শুরু হবার আগে আমের বাজারজাতকরণে সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপে তারা যখন আবার আশাবাদী হয়ে উঠছিলেন এবং শুরুতে বাজারে আমের দাম যখন বেশি, তখন আম চাষিদের মনে কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছিল। এমন সময় সারাদেশে কঠোর লকডাউনের ঘোষণা নওগাঁর সাপাহারে আমের বাজারে তার প্রভাব ফেলেছে।

বর্তমানে বাজারে ব্যাপারীরা আম কেনা এক রকম বন্ধ করে দেয়ায় আম চাষিরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। নওগাঁ জেলার সবচেয়ে বড় আম বাজার সাপাহার উপজেলায়। ঘোষণা মতে কঠোর লকডাউন আসতে আরোও কয়েক দিন বাকি থাকলেও শনিবার থেকেই আম কিনছে না পাইকারী ব্যবসায়ীরা। বাজারে নিয়ে আসা আম নিয়ে দারুন বিপাকে পড়েছেন চাষিরা।
আম বিক্রেতা ও আম চাষিদের বক্তব্য-কঠোর লকডাউন ঘোষণার কারণে বাজারে ক্রেতা নেই। আর সে কারণে আম বিক্রি হচ্ছে না। পাইকাররাও বাইরের জেলা থেকে আসতে ভয় পাচ্ছে। যে কয়জন পাইকার এসেছেন লকডাউনের মধ্যে তাদের কেনা আম বিক্রি করার কোন জায়গা থাকবে কি না। সে চিন্তা মাথায় রেখে তারা প্রায় আম কেনা ছেড়ে দিয়ে বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন। কঠোর এই লকডাউনের কারণে যদি আম উৎপাদনকারীরা আম বিক্রি ও নায্যমূল্য না পায় তাহলে চলতি মৌসুমে আম নিয়ে তাদের শেষ আশাটুকুও ধূলিসাৎ হয়ে যাবে।

শনিবার ও রবিবার সকাল থেকে অসংখ্য আম বিক্রেতাদের সারি সারি আমের লাইন নিয়ে বিকেল পর্যন্ত বসে থাকতে দেখা গেছে এবং সামান্য যে কয়েক মন আম বিক্রি হতে দেখা গেছে তাও গত কয়েক দিনের বাজার দরের অধের্কের চেয়েও কম। ক’দিন আগেই সাপাহারে যে আম বিক্রি হয়েছিল সর্বোচ্চ ২ হাজার ৬শ’ টাকা মন দরে। সেখানে শনিবার ও রবিবারে সে মানের আম বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১ হাজার ২শ’ টাকা মন টাকা দরে বলে অসংখ্য আম বিক্রেতা জানিয়েছেন।

অসহায় আম চাষিদের বক্তব্য, করোনাকে কেন্দ্র করে বাজারে হয়তো এক শ্রেণীর আম ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট তৈরীর পায়তারা করতে পারে। ভবিষ্যতে কোন ব্যবসায়ী কিংবা ব্যক্তিগোষ্ঠী যাতে আম নিয়ে কোন সিন্ডিকেট তৈরী করতে না পারে সেজন্য তারা সর্বক্ষণ প্রশাসনের তদারকি এবং নজরদারী কামনা করেছেন। আড়তের মালিকরা বলছেন, লকডাউনে ব্যাপারীদের কেনা আম তারা বাহিরে বিক্রি করতে পারবে কি না সেই সন্দেহে আম কিনছে না। ব্যাপারীরা যদি আম ক্রয় না করে তাহলে আমাদের করণীয় কি? সব মিলিয়ে নওগাঁর সাপাহারের আম চাষিরা তাদের কষ্টার্জিত উৎপাদিত আম নিয়ে দিশেহারা।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker