সারাদেশ

কুমিল্লায় শিশু কণ্যাকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে সৎ বাবা আটক

কুমিল্লার দেবীদ্বারে সৎ বাবা কর্তৃক আট বছরের শিশু কণ্যাকে ধর্ষণ চেষ্টা অভিযোগে বিক্ষুব্ধ জনতা বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর এবং সৎ বাবা জামালকে  অবরুদ্ধ করে মারধর করেছে। 

হামলা চলাকালে বাড়ির মালিক আব্দুর রশিদের ছেলে সাকিব হোসেননামে এক কিশোরসহ কয়েকজন  আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সংবাদ পেয়ে শনিবার(৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ রায়হানুল ইসলামের নেতৃত্বে দেবীদ্বার থানার একদল পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় অভিযুক্ত সৎ বাবা জামালকে জনতার হাত থেকে  উদ্ধার করে দেবীদ্বার থানায় নিয়ে আসে‌।×

হামলার ঘটনাটি ঘটে শনিবার (৫ এপ্রিল) বিকেলে এবং ধর্ষন চেষ্টার ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার দিবাগত রাত অনুমান ১২টায় উপজেলার পৌর এলাকার বারেরা গ্রামের হেলাল কাজী বাড়ির আব্দুর রশিদের ভাড়াটিয়ার ঘরে। অভিযুক্ত মো. জামাল হোসেন দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর চশুই পালপাড়ার বাচ্চু মিয়ার পুত্র।

স্থানীয়রা জানান, মো. জামাল হোসেন (৫০) নামে এক অটোচালক তার দ্বিতীয় স্ত্রী জেসমিন আক্তার(২৮) ও সৎ কণ্যা (৮) কে নিয়ে ওই বাড়িতে প্রায় এক মাস ধরে ভাড়ায় থাকতেন। কণ্যা শিশুটি কুমিল্লা শহরের দারুল হাকিমিয়া আলিম মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী।

শুক্রবার দিবাগত রাত অনুমান ১২টার সময় সৎ পিতা মো. জামাল হোসেন শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা  করে এবং তার বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে কামর দেয়। এতে ব্যাথায়  শিশু কন্যাটি চিৎকার শুরু করলে প্রতিবেশীরা এসে ঘটনা দেখে এবং শুনেন। প্রথমে বিষয়টি এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে অর্থের বিনিময়ে গোপন রাখার চেষ্টা করেন।

পরে স্থানীয়দের মাঝে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে শনিবার বিকেল ৫টায় বিক্ষুব্ধ জনতা বাড়ি ঘরে হামলা, ভাংচুর ও তাকে মারধর করে। এসময় বাড়ির মালিকের ছেলে সাকিবসহ কিছুলোক বাঁধা দিতে এসে হামলার শিকার হন। এতে কয়েকজন আহত হন। আহতদের মধ্যে সাকিব হোসেনকে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

অভিযুক্ত জামাল হোসেন জানান, সে ২০১৯ সালে তার প্রথম স্ত্রী রেহানা আক্তারকে নিয়ে দেবীদ্বার বানিয়াপাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। প্রায় এক বছর পূর্বে রেহানা বেগমকে তালাক দিয়ে জেসমিনকে বিবাহ করেন। সৎ কণ্যাকে শ্লীলতাহানীর বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিরব ছিলেন। তার স্ত্রী জেসমিন আক্তার বলেন, ঘটনার সময় তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন, পরে মেয়ের কাছ থেকে বিস্তারিত শুনেন।

দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) শাসুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, সংবাদ পেয়ে বিকেলে অভিযুক্ত জামালকে উদ্ধার করে আনতে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠাই। জনতার রোষানলে তাকে উদ্ধার করে আনতে ব্যর্থ হওয়ায়, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার রায়হানুল ইসলামের নেতৃত্বে সন্ধ্যায় আরো পুলিশ ও সেনা সদস্যের একটি দল নিয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। শনিবার রাত দশটায় রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ বিষয়ে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল। 

Author

সম্পর্কিত সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker