দেশে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্য আমদানি করতে হচ্ছে। এতে ব্যয় হচ্ছে বিপুল অঙ্কের অর্থ। আমদানিনির্ভরতা বাড়ার কারণে ডলার সংকটে তা বিরূপ প্রভাব ফেলছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, খাদ্যশস্যের চাহিদা ও উৎপাদনের নানা অসংগতি এবং উৎপাদন ব্যবস্থায় দুর্বলতার কারণে খাদ্যশস্যের এই আমদানিনির্ভরতা।
খাদ্যশস্যের উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকারের পরিকল্পনা থাকলেও প্রয়োজনীয় উপকরণ ও সম্ভাবনার অপর্যাপ্ত ব্যবহার, মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নে অদক্ষতা, পর্যাপ্ত প্রযুক্তির অভাব, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, কৃষকের কার্যকর প্রণোদনার অভাবে খাদ্যশস্যের উৎপাদন সম্ভাবনা পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগানো যাচ্ছে না।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে চাল বাদে প্রায় ৮৭ লাখ ১২ হাজার টন ১১টি খাদ্য ও কৃষি পণ্যের আমদানি হয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে যা ছিল ৯১ লাখ ৫৫ হাজার টন। গত অর্থবছরে প্রধান খাদ্যশস্য হিসেবে গমের আমদানি সবচেয়ে বেশি হয়েছে। গম আমদানি করা হয়েছে ৬৬ লাখ ৬২ হাজার টন, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় সাড়ে ১৬ লাখ টন বেশি।
তবে এই সময়ে ভুট্টার আমদানি কমেছে। গত অর্থবছর ভুট্টার আমদানি ছিল তিন লাখ ৮৪ হাজার টন, যা আগের অর্থবছরে ছিল ২১ লাখ ৬৩ হাজার টন।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গম ও ভুট্টার পাশাপাশি গত অর্থবছরে মসুর ডাল আমদানি ছিল প্রায় পাঁচ লাখ ২৯ হাজার টন। এ ছাড়া ছোলা এক লাখ ৮০ হাজার টন, মুগ ডাল প্রায় সাত হাজার টন, পেঁয়াজ পাঁচ লাখ ৯৭ হাজার টন এবং রসুন আমদানি করা হয় এক লাখ টন।
অন্যান্য পণ্যের মধ্যে আদা ৮৯ হাজার টন, হলুদ ৩০ হাজার টন, জিরা ৩৩ হাজার টন এবং আলু আমদানি করা হয় ৯৭ হাজার টন। যদিও গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলু আমদানি করা হয়নি।
গত কয়েক বছরের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত কয়েক বছরের ব্যবধানে এসব খাদ্যপণ্যের আমদানির পরিমাণ কমে আসছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট আমদানির পরিমাণ ছিল ৯২ লাখ ৩৩ হাজার টন, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছিল ৯১ লাখ ৫৫ হাজার টন।
তবে গত অর্থবছরে আমদানি কমার পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে ভুট্টা।